খাগড়াছড়ি সদরপ্রধান খবর

খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে মহাসমাবেশ

শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ঘোষণা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়ি। ন্যায়বিচারের দাবিতে হাজারো শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণ শুক্রবার দুপুরে শহরের চেঙ্গী স্কয়ারে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসমাবেশ করেছে। “জুম্ম ছাত্র-জনতা” ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন পাহাড়ি শিক্ষার্থীসহ অধিকারকামী জনগণ।

দুপুরে কলেজ মাঠ থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের চেঙ্গী স্কয়ার, মহাজনপাড়া, নারিকেলবাগান, শাপলা চত্বর, আদালত সড়কসহ প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার চেঙ্গী স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বক্তারা শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জুম্ম ছাত্র-জনতার মুখপাত্র শিক্ষার্থী উক্যনু মারমা, কৃপায়ন ত্রিপুরা, কবিতা চাকমা, আকাশ ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের প্রতিনিধি ওয়াইপাই মারমা, মংসাই মারমা, অংসুই মারমা প্রমুখ।

“বিচারহীনতার সংস্কৃতি ধর্ষণের উৎসাহ জোগাচ্ছে”

বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নারীরা আজ পাহাড়-সমতল কোথাও নিরাপদ নয়। শিশু থেকে বৃদ্ধা—কেউই রেহাই পাচ্ছে না। এর মূল কারণ হলো বিচারহীনতার সংস্কৃতি। তারা অভিযোগ করেন, ঘটনার তিন দিন পরও মামলার দুই আসামির একজনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর আগে গত ২৭ জুন খাগড়াছড়ি সদরে সংঘটিত দলবদ্ধ ধর্ষণের আসামিরাও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

ভিকটিমের পরিবারের বর্ণনা

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা জানান, “আমার মেয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়তে যেত এবং রাত ৯টার দিকে ফিরত। মঙ্গলবারও গিয়েছিল, কিন্তু ফেরেনি। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে একটি ফসলের খেতে অচেতন অবস্থায় তাকে পাই।” বর্তমানে মেয়েটি খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ বলছে, একজন গ্রেপ্তার – চলছে অন্যদের ধরতে অভিযান

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

“আমাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী” – অভিযোগ ছাত্রনেতার

সমাবেশে জুম্ম ছাত্র-জনতার আহ্বায়ক উক্যনু মারমা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে। জনগণের প্রতিরোধের মুখে পরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, “ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলবে। তবে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ওই কর্মসূচির পর আপাতত আন্দোলন স্থগিত থাকবে। এর মধ্যেও দাবি মানা না হলে লাগাতার হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

Related Articles

Back to top button