টার্মিনালের পাশে কাঠের স্তূপ, ঝুঁকিতে যাত্রী নিরাপত্তা
বান্দরবানের রুমা বাস টার্মিনালের পাশে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কাঠের স্তুপ রাখার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, এই কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রুমা কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. মাসুদ রানা মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক পিপলু মারমা।
প্রায় এক মাস ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঠ এনে টার্মিনালের লাগোয়া স্থানে রাখা হচ্ছে। ট্রাকে কাঠ লোড-আনলোডের কারণে যাত্রীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া পানির পাইপ ভেঙে যাওয়া এবং টার্মিনাল এলাকায় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় জননিরাপত্তাও ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে নির্মিত রুমা বাস টার্মিনাল চালু হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। চালুর পর থেকেই প্রতিদিন যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। এর মধ্যে টার্মিনালের উত্তর-পশ্চিম কোণে কাঠের গাদা করে রাখায় পুরো প্রকল্পের সুষ্ঠু ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দেখা যায়, যাত্রী কাউন্টারের একেবারে পাশে বিশাল কাঠের স্তুপ। ট্রাকের ভারী চাপেই টার্মিনালের পানি সরবরাহ লাইন ভেঙে গেছে।
এ বিষয়ে কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পিপলু মারমা বলেন, জমিটি বাস টার্মিনালের নয়, স্থানীয় প্রভাবশালী জুয়েল বমের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া। তবে চুক্তি লিখিত নাকি মৌখিক—সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। জুয়েল বমের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাস সার্ভিস লাইনম্যান জাকির হোসেন বলেন, “টার্মিনালে কাঠের স্তুপের কারণে যাত্রীদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। বহুবার বাইরে কাঠ রাখার অনুরোধ করলেও তারা কর্ণপাত করেননি।”
কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মাসুদ রানা মাসুম দাবি করেন, পাইপ নষ্ট হয়নি, শুধু চেপে গেছে। গর্ত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং বিকল্প রাস্তা করানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী জানান, “গাছের ডিপো অনুমোদনের বিষয়টি বন বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে রুমা বন বিভাগের রেঞ্জার অসীম বাড়ি বলেন, ডিপোর জন্য আবেদন করা হয়েছে, অনুমোদনের সিদ্ধান্ত রোববার (৫ অক্টোবর) জানা যাবে। তবে কাঠ সরানো না হলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট কিছু জানাননি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই জনস্বার্থমূলক প্রকল্প ঝুঁকির মুখে পড়বে এবং যাত্রীদের জীবন আরও হুমকির মুখে পড়বে।