উৎসব ঘনালেও রুমা বাজারে নেই ক্রেতার ভিড়
আগামীকাল শনিবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব। তবে উৎসব ঘনিয়ে এলেও বান্দরবানের রুমা বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেই কোনো প্রাণচাঞ্চল্য। দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতাশূন্য অবস্থায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার(২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ও বিকেলে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ করে কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতা নেই বললেই চলে। দোকানে বসে অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।
কাপড় ব্যবসায়ী মো. মোর্শেদ (৪৫) ও ওসমান বলেন, “দুর্গোৎসব সামনে, কিন্তু ক্রেতা আসছে না। বিক্রি না হলে ব্যবসা চলবে কেমন করে?”
মা স্টোরের স্বত্বাধিকারী মিটু দাশ জানান, শাড়ি বা থামিং-লুঙ্গি কোনোটাই বিক্রি হচ্ছে না। বরং ঋণের বোঝা বাড়ছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,
“বেচাকেনা না থাকায় মন মানসিকতাও ভালো নেই।”
একই চিত্র সাধন বড়ুয়ার দোকানেও। তিনি বলেন, গত বছর এই সময়ে এত ভিড় ছিল যে ভাগিনা ও স্ত্রীকে ডেকে সহায়তা নিতে হয়েছিল। কিন্তু এবার দোকানে একাই বসে থাকতে হচ্ছে। ক্রেতা নেই, ফলে ব্যবসায়িক ক্ষতি সামলাতে গিয়ে ৪ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ধার করতে হয়েছে। তবে তিনি আশা করছেন, বৃহস্পতিবার ও সোমবারে মারমা সম্প্রদায়ের বাজারে কিছুটা বিক্রি হতে পারে।
তবে হতাশার মাঝেও কিছু দোকানে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ইত্যাদি স্টোরের ম্যানেজার খোকন জানান, সকাল ১০টা এবং বিকেল ৩টার পর তার দোকানে তুলনামূলক বেচাকেনা হচ্ছে। বিশেষ করে ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীরা জর্জেট, লিলেন, পপলিন ও শাড়ি কিনছেন।
অন্যদিকে, রুমা উপজেলার শারদীয় উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি রাজিব দাশ জানান, শনিবার থেকে দুর্গোৎসব উপলক্ষে টানা তিন দিনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে এ উৎসব পালিত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সদর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার পলাশ চৌধুরী জানান,
“দুর্গাপূজায় এবার পরিবারের সবাই মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করব এবং সাধারণ মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করব।”
উল্লেখ্য, শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসব এবং আগামী ৬ অক্টোবর থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা বা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে পালিত হবে।
রুমা বাজারের ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এ দুটি ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে ক্রেতা সমাগম বাড়লে বাজার আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।






