রাশিয়ার কাছাকাছি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের ‘চরম উসকানিমূলক’ বক্তব্যের জবাবে রাশিয়ার নিকটবর্তী এলাকায় দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি তিনি নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে জানান। খবর বিবিসির।
ট্রাম্প বলেন, “এই বেপরোয়া ও আগুন ঝরানো বক্তব্যগুলো কেবল কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে—এই আশঙ্কায় আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শব্দের গুরুত্ব অনেক, অনেক সময় তা অনিচ্ছাকৃত বিপর্যয়ের পথও খুলে দিতে পারে। আমি আশা করি, এবার তেমন কিছু ঘটবে না।”
তবে সাবমেরিন দুটি ঠিক কোন অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে, তা প্রকাশ করেননি তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নিয়ম অনুযায়ী এসব তথ্য গোপন রাখা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—এই দুই দেশের হাতেই রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার এবং শক্তিশালী পারমাণবিক সাবমেরিন বহর।
সম্প্রতি মেদভেদেভ সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি না মানলে এবং ট্রাম্প ঘোষিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে রাশিয়া কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে। এরই জবাবে সাবমেরিন মোতায়েনের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
তবে তিনি পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিনের কথা বলেছেন, নাকি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়ার এক সাবেক প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছেন। আমরা আমাদের জনগণকে সুরক্ষিত রাখব।”
এ ঘটনার পর মস্কোর শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ক্রেমলিন।
এর আগে ট্রাম্প পুতিনকে ৮ আগস্টের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সময়সীমা বেঁধে দেন। এমনকি জুলাইয়ের শুরুতে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন—যুদ্ধ বন্ধ না হলে রাশিয়ার তেলের ওপর কঠোর শুল্ক এবং অন্যান্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
মেদভেদেভ এসব হুমকিকে ‘নাটকীয়’ এবং ‘রাশিয়ার জন্য অপ্রাসঙ্গিক’ আখ্যা দেন। সম্প্রতি তিনি ‘ডেড হ্যান্ড’ হুমকির কথাও বলেন, যা রাশিয়ার সম্ভাব্য পাল্টা পারমাণবিক হামলার স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প ও মেদভেদেভ একে অপরকে নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণে জড়িয়ে পড়েছেন। ট্রাম্প মেদভেদেভকে “ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট” বলে উল্লেখ করে সতর্ক করেন, তার শব্দচয়ন “বিপজ্জনক সীমায়” পৌঁছেছে।