বাঘাইছড়িপ্রধান খবর

রাঙামাটিতে জুম ধানে ইঁদুরের উপদ্রব, ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক পরিবার

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির জনগণের অর্ধেক খাদ্যের যোগান আসে জুম চাষ থেকে। বছরের শুরুতে পাহাড়ের জঙ্গল পরিষ্কার করে আগুনে পোড়ানোর পর মে মাসে ধানসহ নানা শস্য বপন করা হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এসব ফসল ঘরে তুলে জীবিকা নির্বাহ করেন জুমিয়ারা।

কিন্তু এবার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে জুম ধানে দেখা দিয়েছে ইঁদুরের উপদ্রব। আগস্টের শেষের দিকে ধান পাকতে শুরু করলে প্রতিরাতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইঁদুর ক্ষেতে গিয়ে ধান খেয়ে নষ্ট করছে। এতে আতঙ্কে পড়েছেন কয়েক হাজার জুমিয়া পরিবার।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা জানান, অন্তত পাঁচ গ্রামের ২৩২ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শিয়ালদাই ও লুইপাড়ায় ৫৮ পরিবার, হাচ্চ্যাপাড়ায় ৭০, জামপাড়ায় ১৬, অরুণপাড়ায় ৪০ ও লুংতিয়ানপাড়ায় ৪৮ পরিবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

শিয়ালদাই মৌজার হেডম্যান জৈইপুই থাং ত্রিপুরা বলেন, “ধান পাকা শুরু হতেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইঁদুর জমিতে ঢুকে ধান গাছের গোড়া কেটে ফেলছে। কোনো জমিতে ফুল এসেছে, আবার কোনো জমিতে শীষ দেখা দিয়েছে। কিন্তু সব জায়গাতেই ধান নষ্ট করছে ইঁদুর।”

এর আগে ২০২২ সালেও সাজেকে ইঁদুরের উপদ্রব হয়েছিল। তখন পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার ক্ষতির মুখে পড়ে।

গত মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বাঘাইছড়ি সফরে গেলে স্থানীয়রা বিষয়টি তার নজরে আনেন। তিনি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ মৌসুমে জেলার পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে জুম ধান চাষ হয়েছে। এতে সাড়ে সাত হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বাঘাইছড়ি উপজেলায় চাষ হয়েছে এক হাজার ৫৪৭টি পাহাড়ে।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, “এখনও আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য আসেনি। তথ্য পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

Related Articles

Back to top button