রুমা (বান্দরবান) প্রতিনিধি:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে বান্দরবানের রুমা উপজেলার ৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। যে সময়ে শিক্ষার্থীদের বই-খাতা নিয়ে শ্রেণিকক্ষে থাকার কথা, সেই সময়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র—কেউ স্কুলের বারান্দায় খেলাধুলায় মেতে আছে, কেউ বা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
শিক্ষকরা অফিসকক্ষে অবস্থান করলেও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকায় কার্যত শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি বিঘ্নিত হচ্ছে।
রোববার থেকে সারাদেশের মতো রুমা উপজেলাতেও সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি পালন করছেন।
সহকারী শিক্ষক উক্যসিং মারমা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষকদের বেতন-গ্রেড বৈষম্য রয়ে গেছে। আমাদের দাবি ন্যায্য। সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ক্লাসে ফিরতে প্রস্তুত।”
অন্য এক শিক্ষক গর্ডেন ত্রিপুরা বলেন,“আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই, কারণ শ্রেণিকক্ষই আমাদের মূল দায়িত্বের জায়গা। কিন্তু ন্যায্য দাবি আদায় না হলে বাধ্য হয়েই কর্মবিরতি পালন করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ—অল্পদিনের জন্য সহমর্মিতা দেখিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।”
শিক্ষার্থীরা জানান, সামনে বার্ষিক ও বৃত্তি পরীক্ষা থাকায় তারা দ্রুত ক্লাস শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছে।
এক শিক্ষার্থী বলে,“স্যাররা ক্লাস নিলে আমাদের পড়া ভালোভাবে বুঝতে পারি। পরীক্ষা সামনে, তাই আমরা নিয়মিত ক্লাস চাই।”
এ বিষয়ে রুমা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান বলেন,“শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক বলে আমরা মনে করি। তবে আমরা আশাবাদী, সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে এবং শিক্ষকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আবার শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন। শিক্ষার্থীদের যেন দীর্ঘসময় পাঠদানের বাইরে থাকতে না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।”
শিক্ষকদের দাবি আদায় নিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সকলের প্রত্যাশা—দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে আবারও বিদ্যালয়গুলোতে স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে।
